Monday, November 30, 2015

ভেষজ বা হারবাল উপায়ে রোগের চিকিৎসা

নিজেই করুন ভেষজ বা হারবাল উপায়ে রোগের চিকিৎসা। এই ভেষজ চিকিৎসা একদিকে যেমন নিরাপদ, তেমনই সহজলভ্য আর নিরাময় ক্ষমতা সম্পন্ন জটিল সব রোগের জন্য কখনো কখনো লক্ষ লক্ষ টাকাও খরচ হয় ক্ষেত্রে বিনা পয়সায় বন জঙ্গল থেকে আপনি নিজেই সংগ্রহ করতে পারেন বিভিন্ন ভেষজ উপাদান
আসুন, জেনে নেই কয়েকটি সহজ ভেষজ চিকিৎসা সম্পর্কে

) মায়ের বুকের দুধ বাড়াতেঃ
যেসব মায়েরা সন্তানকে পর্যাপ্ত পরিমাণ দুধ খাওয়াতে পারেন না তাদের জন্যে কলমি শাক দারুণ উপকারী। কলমি শাক বেটে / চামচ রস ঘি দিয়ে সাঁতলে নিয়ে দিনে দুবার সকালে বিকালে খেলে মায়ের দুধ বাড়বে। কলমি শাকের ভাজা খেলে তাতে কিন্তু কাজ হবে না
) মুখের ব্রুন দূরীকরণেঃ
মুখে উঠেছে ব্রণ? একটু খানি লবঙ্গ বাটা লাগিয়ে দিন ক্ষত স্থানে। দ্রুত মিলিয়ে যাবে, আবার দাগও থাকবে না
) পেট ফাঁপা দূরীকরণেঃ
পেট ফাঁপা কেবল বাচ্চাদের নয়, বড়দেরও অসুখ। ডালসহ পুদিনা পাতা / ঘন্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। তারপর সেই পানি ছেঁকে খেলে পেট ফাঁপা ভালো হবে
) ঘামের দুর্গন্ধ দূরীকরণেঃ
অনেকেরই গায়ে প্রচণ্ড ঘামের দুর্গন্ধ হয়। গায়ে না হলেও পায়ে তো হয়ই। বেল পাতার রস পানির সঙ্গে মিশিয়ে আক্রান্ত স্থান মুছুন কয়েকদিন।
) মুখের ঘা সমস্যা সমাধানেঃ

ঠোঁটের দুপাশে এবংমুখের ভেতরে অনেক সময় ঘায়ের মত হয়।গাব ফলের রসের সঙ্গে অল্প পানি মিশিয়ে কয়েকদিন মুখ ধুলে ঘা সেরে যায়
) পেটে কৃমির সমস্যাঃ
পেটে কৃমির সমস্যা খুব যন্ত্রণাদায়ক। বাচ্চাদের জন্য তো অবশ্যই। তেঁতুল পাতার রস সামান্য পানিতে মিশিয়ে খেলে কৃমির সমস্যা দূর হয়। পেটের কৃমি দূর করতে প্রতিদিন সকালে নাস্তার পর এক চামচ নারকেল খেতে পারেন। এতে পেটের কৃমি দূর হয়ে যাবে
) নাক দিয়ে রক্ত পড়লেঃ
নাক দিয়ে রক্ত পড়লে ডাবের পানি রোজ খাওয়া উচিত। এর সঙ্গে খালি পেটে নারকেল খেলেও নাক দিয়ে রক্ত পড়া বন্ধ হয়ে যায়
) দাঁত ব্যথা কমাতেঃ
দাঁত ব্যথা কমাতে একটি পেয়ারার পাতা নিয়ে ভালো করে চিবাতে থাকুন। চিবিয়ে রস বের করে নিন। দাঁতের ব্যথায় পেয়ারা পাতা চিবালে ব্যথা উপশম হয়
) বদহজমেঃ
অজীর্ণ রোগে বা বদহজমে নিমের ছাল আদর্শ ওষুধ। / গ্রাম নিমের ছাল এককাপ গরম পানিতে একরাত ভিজিয়ে রেখে পরদিন সকালে সেই পানি ছেঁকে খালি পেটে খেলে অজীর্ণ সেরে যাবে
১০) লিভার বা যকৃতের ব্যথা সারাতেঃ
লিভার বা যকৃতের ব্যথা সারাতেও নিম এক নম্বর। গ্রাম নিমের ছাল, / গ্রাম কাঁচা হলুদ গ্রাম খানিক শুকনো আমলকির গুঁড়োর সাথে মিশিয়ে খালি পেটে খেলে এক সপ্তাহের মধ্যে ব্যথা দূর হয়ে যাবে
১১) কোষ্ঠকাঠিন্যেঃ
যে সব শিশু রাতে না ঘুমিয়ে ছটফট বা কান্নাকাটি করে তারা সাধারণত কোষ্ঠকাঠিন্যে ভোগে। এদেরও অল্প গরম গরুর দুধের সাথে ২০/২৫ ফোঁটা কলমির রস খাওয়ালে এদের কোষ্ঠকাঠিন্য সেরে যাবে। তবে, শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে খাওয়ানো ভালো
১২) শ্বাসকষ্ট রোগেঃ
শ্বাসকষ্ট কমাতে বাসক গাছের পাতা ছাল একসঙ্গে সেদ্ধ করে বেটে মধু মিশিয়ে খেতে হবে রোজ কমপক্ষে একবার। নিয়মিত সেবনে কষ্ট নিরাময় হবে
(সংগৃহীত: ইন্টারনেট থেকে)

Monday, November 23, 2015

ধনে পাতার উপকারিতায় সাবধান

ধনে পাতার স্বাদ ও গন্ধের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে থাকেন না এমন ব্যক্তি কিন্তু খুব কম-ই আছে। প্রায় সব ধরনের তরকারিতেই ধনে পাতা স্বাদ বৃদ্ধি করে থাকে; সেই সাথে যুক্ত করে অসাধারণ ঘ্রাণ। ধনে পাতা কি শুধু স্বাদে গন্ধেই অনন্য? খাদ্য ও পুষ্টিগুণ বিচারে ধনে পাতার উপকারিতা বর্ণনাতীত।


ধনে পাতার উপকারিতা:

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ:
পুষ্টিবিদরা জানিয়েছেন, ধনে পাতা কেবল সৌন্দর্য আর স্বাদ বাড়াতেই অনন্য নয়, স্বাস্থ্যের জন্যও বেশ উপকারী। ধনে পাতা রক্তে চিনির পরিমাণ কমিয়ে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে। 

কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে:
শরীরের জন্য ক্ষতিকর খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে ভালো কোলেস্টেরল বাড়াতে সাহায্য করে। 

পাকস্থলির সমস্যায় ধনে পাতা:
ধনে পাতা পেট ফাঁপা পাকস্থলির বিভিন্ন সমস্যা দূর করে হজমশক্তি বাড়ায়। 

হাড় মজবুত করে:
এটি হাড়কে মজবুত করে বাত রোগ নিরাময় করে। 

মেয়েদের মাসিকেও কার্যকর:
মেয়েদের মাসিকে অতিরিক্ত ক্ষরণ নিয়ন্ত্রণেও ধনে পাতা কাজে আসে। এজন্য পাঁচশ মিলিলিটার পানিতে ছয় গ্রাম ধনে পাতা ফুটিয়ে নিতে হবে। এরপর ওই গরম পানিতে এক টেবিল চামচ চিনি ভালোভাবে মিশিয়ে খেতে হবে। 

বাতের ব্যথা উপসম:
ধনে পাতা সিদ্ধ পানি খেলে বাতের ব্যথা সেরে যায়।

রূপচর্চায় ধনে পাতা:
রূপচর্চায়ও দারুন কাজ দেয়। ধনে পাতায় রয়েছে ভিটামিন , ভিটামিন সি, ফসফরাস ক্লোরিন। তাই প্রাকিতিক ব্লিচ হিসেবে ধনে পাতা দারুন কার্যকর। যাদের ঠোঁটে কালো দাগ আছে তারা রোজ রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ধনে পাতার রসের সাথে দুধের সর মিশিয়ে ঠোঁটে লাগান। এইভাবে এক মাস লাগালে ঠোঁটের কালো দাগ দূর হবে আর ঠোঁট কোমলও হবে। 

এছাড়া ইউরিন ইনফেকশন প্রতিরোধ করে।ধনে পাতায় রয়েছে শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ফাইবার, আয়রন, ফ্লেভোনয়েড, ম্যাগনেশিয়ামসহ বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান যা স্বাস্থ্যের জন্য বেশ উপকারী।  

ধনে পাতার কিছু অপকারিতা:


নিম্ন রক্তচাপ
অতিরিক্ত ধনেপাতা খাওয়ার ফলে দেহের হৃৎপিন্ডের স্বাস্থ্য নষ্ট করে ফেলে, যার ফলে নিম্ন রক্তচাপ সৃষ্টি করে। বিশেষজ্ঞরা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে এই ধনেপাতা খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তাই এটি অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে নিম্ন রক্তচাপের উদ্ভব ঘটতে পারে। এছাড়া এটি হালকা মাথাব্যথারও উদ্রেক করতে পারে।

বুকে ব্যথা
অতিরিক্ত ধনেপাতা আহারে বুকে ব্যথার মত জটিল সমস্যাও দেখা দিতে পারে। এটা শুধুমাত্র অস্বস্তিকর ব্যথাই সৃষ্টি করে না তা দীর্ঘস্থায়ীও হয়ে থাকে। এজন্য এই সমস্যা থেকে রেহাই পেতে দৈনন্দিন আহারে কম করে এই ধনেপাতা খেতে পারেন।

লিভারের ক্ষতিসাধন
অতিরিক্ত ধনেপাতা খেলে এটি লিভারের কার্যক্ষমতাকে খারাপভাবে প্রভাবিত করে থাকে। এতে থাকা এক ধরনের উদ্ভিজ তেল শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে আক্রান্ত করে ফেলে। এছাড়া এটাতে এক ধরনের শক্তিশালী অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রয়েছে যেটা সাধারণত লিভারের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে কিন্তু দেহের মাঝে এর অতিরিক্ত মাত্রার উপস্থিতি লিভারের ক্ষতিসাধন করে।

পেট খারাপ
স্বাভাবিকভাবে ধনেপাতা গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনাল বিষয়ক সমস্যা দূর করে থাকে কিন্তু বেশি পরিমাণে ধনেপাতা সেবন পাকস্থলীতে হজমক্রিয়ায় সমস্যা তৈরি করে থাকে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে এক সপ্তাহে ২০০ এমএল ধনেপাতা আহারে গ্যাসের ব্যথা ওঠা, পেটে ব্যথা, পেট ফুলে ওঠা, বমি হওয়া হওয়ারও সম্ভাবনা দেখা যায়।

ডায়রিয়া
ধনেপাতা অল্প খেলে পেটের সমস্যা দূর হয় কিন্তু এটি বেশি পরিমাণে খেলে ডায়রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। এছাড়া এর ফলে ডিহাইড্রেশন হতে থাকে। ফলে ডায়রিয়ার সমস্যাটি হতেই থাকে। তাই এই ধরনের সমস্যা এড়াতে প্রতিদিনের খাবারে ধনেপাতা কম পরিমাণে ব্যবহার করুন।

নিঃশ্বাসের সমস্যা
আপনি যদি শ্বাসকষ্টের রোগী হয়ে থাকেন তাহলে এই ধনেপাতা আহার থেকে বিরত থাকুন। কেননা এটি আপনার শ্বাস প্রশ্বাসের সমস্যা করে থাকে যার ফলে ফুসফুসে অ্যাজমার সমস্যা হতে পারে। এই ধনেপাতা খেলে মাঝে মাঝে ছোট ছোট নিশ্বাস নিতেও সমস্যা তৈরি হয়।

ত্বকের সংবেদনশীলতা
সবুজ ধনেপাতাতে মোটামুটিভাবে কিছু ঔষধি অ্যাসিডিক উপাদান থাকে যেটি ত্বককে সূর্যরশ্মি থেকে বাঁচিয়ে সংবেদনশীল করে থাকে। কিন্তু অতিরিক্ত সেবনে সূর্যের রশ্মি একেবারেই ত্বকের ভেতরে প্রবেশ করতে পারে না ফলে ত্বক ভিটামিন কে থেকে বঞ্চিত হয়। এছাড়া ধনেপাতা ত্বকের ক্যান্সার প্রবণতাও তৈরি করে থাকে।

অ্যালার্জীর সমস্যা
ধনেপাতার প্রোটিন উপাদানটি শরীরে আইজিই নামক অ্যান্টিবডি তৈরি করে যা শরীরের বিভিন্ন রাসায়নিক উপাদানকে সমানভাবে বহন করে থাকে। কিন্তু এর অতিরিক্ত মাত্রা উপাদানগুলোর ভারসাম্য নষ্ট করে ফেলে। ফলে অ্যালার্জীর তৈরি হয়। এই অ্যালার্জীর ফলে দেহে চুলকানি, ফুলে যাওয়া, জ্বালাপোড়া করা, র্যা ওঠা এই ধরনের নানা সমস্যা হয়ে থাকে।

প্রদাহ
অতিরিক্ত ধনেপাতা সেবনের আরেকটি বিশেষ পার্শ্ব প্রতক্রিয়া হল মুখে প্রদাহ হওয়া। এই ঔষধিটির বিভিন্ন এসিডিক উপাদান যেটি আমাদের ত্বককে সংবেদনশীল করে থাকে পাশাপাশি এটি মুখে প্রদাহেরও সৃষ্টি করে। বিশেষ করে এর ফলে ঠোঁট, মাড়ি এবং গলা ব্যথা হয়ে থাকে। এর ফলে সারা মুখ লাল হয়েও যায়।

ভ্রূণের ক্ষতি
গর্ভকালীন সময়ে অতিরিক্ত ধনেপাতা খাওয়া ভ্রূণের বা বাচ্চার শরীরের জন্য বেশ ক্ষতিকারক। ধনেপাতাতে থাকা কিছু উপাদান মহিলাদের প্রজনন গ্রন্থির কার্যক্ষমতাকে নষ্ট করে ফেলে যার ফলে মহিলাদের বাচ্চা ধারণ ক্ষমতা লোপ পায় এবং বাচ্চা ধারণ করলেও গর্ভকালীন ভ্রূণের মারাত্মক ক্ষতি করে থাকে। 



 (সংগৃহীত: Internet )