Tuesday, June 3, 2014

অ্যালোভেরার জাদু



 অ্যালোভেরা জাদুকরি রহস্য

 
আমরা অনেকেই শখ করে বাড়ির ছাদে বা বারান্দায় বিভিন্ন ফুল ফল বা ভেষজ উদ্ভিদ লাগিয়ে থাকি। এর মধ্যে ‘‘অ্যালভেরাবা ঘৃতকুমারী গাছ থাকবেই। কিন্তু আমরা কি জানি যে এই ছোট্ট গাছটির নানা ইতিহাস আমাদের দৈনন্দিন জীবনে কত উপকার করে? মানব দেহের অভ্যন্তরীণ বাহ্যিক সকল ক্ষেত্রেই অ্যালভেরার রয়েছে জাদুকরী গুনাগুণ। আসুন অজ্ঞতায় না থেকে জেনে নিই
মিশরীয় লোককাহিনী থেকে জানা যায়, সৌন্দর্যবর্ধন করে যে প্রকৃতিকন্যা তার লাতিন নাম অ্যালোভেরা ওরফে ঘৃতকুমারী। আর এটাই হলো মিশরের টলেমি রাজবংশের সম্রাজ্ঞী, কূটনীতিক পরে সীজার পত্নী ক্লিওপেট্রার ত্বকের সৌন্দর্যের গোপন রহস্য। স্বাস্থ্য এবং সৌন্দর্যে অ্যালোভেরার ব্যবহার আজকের নয়। প্রাচীন কালেও রানী ক্লিওপেট্রা, সম্রাট আলেকজান্ডার, বাদশাহ সোলায়মান, নেপোলিয়ন এবং ক্রিস্টোফার কলম্বাসের মত বিখ্যাত মানুষেরা অ্যালোভেরা ব্যবহার করতেন। ঘৃতকুমারী গাছটা দেখতে অনেকটাই কাঁটাওয়ালা ফণীমনসা বা ক্যাকটাসের মতো। অ্যালোভেরা ক্যাক্টাসের মত দেখতে হলেও, ক্যাক্টাস নয়। এর পাতাগুলো বর্শা আকৃতির লম্বা, পুরু মাংসল। তরুটির রং সবুজ যার মাঝে রয়েছে রহস্যময় গুণ যার গুণকীর্তন করে কোটি ডলার কামিয়ে নিচ্ছে পাশ্চাত্য, প্রাচ্য দেশীয় তরু থেকে
গোটা বিশ্ব জুড়ে এই গাছের জুস বা রস ক্যাপসুল বা জেলের আকারে বিক্রি হচ্ছে। এই জেলের ভেতরে আছে বিশটি অ্যামিনো অ্যাসিড যা থেকে বিজ্ঞানীরা বলেন প্রাণের সৃষ্টি। এই ২০ অ্যামিনো অ্যাসিডের আটটি দেহের মাঝে তৈরি হয় না। এটা বাইরে থেকে খাদ্যের আকারে গ্রহণ করতে হয়। এটা আসে ঘৃতকুমারী থেকে
মেছতা দূর করার আরেকটি উপাদান হলো এলোভেরা বা ঘৃতকুমারী পাতার জেল। এই জেলের রয়েছে ত্বকের যাবতীয় সমস্যা দূর করার ক্ষমতা। আক্রান্ত স্খানে আঙুলের ডগার সাহায্যে ধীরে ধীরে জেল ঘষে লাগাতে হবে এবং সারা রাত লাগিয়ে রাখতে হবে। এভাবে কয়েক সপ্তাহ লাগালে আশানুরূপ ফল পাওয়া যাবে। ছাড়া অ্যালোভেরা জেলের সাথে ভিটামিন এবং প্রিমরোজ অয়েল মিশ্রিত করে লাগালে এক সপ্তাহের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ফল পাওয়া যাবে। একই সাথে জেলের শরবত খেলে ভালো হবে
অ্যালভেরাতে রয়েছে ভিটামিন , সি, , ফলিক এসিড, বি , বি , বি , বি ১২। প্রায় ২০ রকমের মিনারেলস যেমন ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, জিঙ্ক, সোডিয়াম, আয়রন পটাসিয়াম, কপার ইত্যাদি। মানবদেহের জন্য ২২টি অ্যামিনো এসিড প্রয়োজন আর এর মধ্যে টি উপাদান থাকা অনস্বীকার্য। প্রধান টি উপাদানসহ আনুমানিক ২০ টি অ্যামিনো এসিড অ্যালভেরায় বিদ্যমান
মানবদেহের টিস্যু নিষ্প্রাণ হয়ে গেলে, ত্বকে ফুসকুড়ি উঠলে এলভেরার জেল খুবিই উপকারী। যাদের এলার্জির সমস্যা তীব্র তারা মাস নিয়মিত অ্যালভেরার শরবত খেয়ে দেখুন, জাদুকরী ফল পাবেন
নতুন চুল গজানোর জন্য অ্যালভেরার রস নারিকেল তেলের সাথে মিশিয়ে মাথার ত্বকে ম্যাসেজ করে ৩০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন, সপ্তাহে বার করে মাস। পরিবর্তন নিজেই লক্ষ করতে পারবেন। ছাড়াও অ্যালভেরার রস চুল কে কন্ডিশনিং করে মোলায়েম হতে সাহায্য করে যা অনেকদিন স্থায়ী থাকে। খুশকি দূর করতে এটি প্রহরীর মত কাজ করে। এটি রক্তের কলেস্টরেল দূর করতে সাহায্য করে
লিখেছেনঃ আইরিন সুলতানা
ছবিঃ ন্যাচারালকেয়ার.বডিএক্সবিউটি.কম

স্বাস্থ্য সৌন্দর্যতায় প্রতিদিন এক গ্লাস অ্যালভেরা শরবত

ভেষজ ওষুধী গাছ হিসেবে অ্যালোভেরা বা ঘৃতকুমারীর নাম আমরা সবাই শুনেছি অ্যালোভেরা গাছের পাতার ভেতরে স্বচ্ছ পিচ্ছিল ধরণের শাঁস থাকে যা অ্যালোভেরা জেল নামে পরিচিত অ্যালভেরার এই পাতা থেকে জেল বের করে, সামান্য মধুর সাথে মিশিয়ে তৈরি করা যায় সুস্বাদু এক শরবতঅ্যালোভেরার এই শরবত অনেকেই পছন্দ না করলেও, এতে রয়েছে প্রচুর পুষ্টিগুণ
প্রতিদিন এক গ্লাস অ্যালভেরার শরবত শুধু শরীরকেই সুস্থ রাখে না, সৌন্দর্য বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে অ্যালভেরার রস রক্তে মিশে রক্তে অক্সিজেনের মাত্রাকে বাড়িয়ে দেয় দেহের শিরা উপশিরায় অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্তের সরবরাহের কারনে আমাদের হৃদপিণ্ডের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এছাড়াও অ্যালোভেরা রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে দিতে কার্যকরী তাই হৃদপিণ্ডের সুস্থতায় প্রতিদিন এক গ্লাস অ্যালভেরার শরবত পানের পরামর্শ দিয়ে থাকেন ডাক্তাররা তাছাড়াও অ্যালভেরার রস পানে দেহের ইমিউন সিস্টেম ৪০% বেশী উন্নত হয় প্রতিদিন এক গ্লাস অ্যালভেরার শরবত দেহে সাদা রক্ত কনিকা তৈরি করে যা, দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে অ্যালোভেরার উদ্ভিজ্জ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট দেহের ইমিউ সিস্টেম অনেক উন্নত করে

অ্যালভেরায় রয়েছে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিএইজিং উপাদান, যা ত্বকের সুরক্ষায় বিশেষভাবে কার্যকরী প্রতিদিন অ্যালভেরার রস পানের ফলে ত্বকের নানান সমস্যা সহজেই দূর হয় এটি ব্রন, ইনফেকশন এমনকি ত্বকের বুড়িয়ে যাওয়া রোধ করতেও কার্যকরী এছাড়াও অ্যালোভেরার রস সরাসরি ত্বকে প্রয়োগ করলে ব্রণ এবং ব্রণের দাগ থেকেও মুক্তি পাওয়া যায় শুধু তাই নয়, অ্যালোভেরা ত্বকের সাথে সাথে চুলের গঠনেও কার্যকরী ভূমিকা রাখে প্রতিদিন এক গ্লাস অ্যালভেরার শরবত চুল ঝরে পড়া, চুলের আগা ফেটে যাওয়া, চুল পাতলা হয়ে যাবার মত সমস্যা রোধ করে অ্যালোভেরার রস সরাসরি তেলের সাথে মিশিয়েও চুলে ব্যবহার করা যায়

অ্যালভেরার এই বহুগুনী কার্যকারিতার কারনে প্রতিদিন অ্যালভেরার শরবত পান করে, আমরা আমাদের শরীর ত্বকের সুরক্ষা করতে পারি


ঘরেই তৈরি করুন চুলের জন্য অ্যালোভেরা কন্ডিশনার



অ্যালোভেরার অনেক গুনের মধ্যে একটি হলো এটি চুলের উজ্জলতা বাড়িয়ে তুলতে কন্ডিশনারের কাজ করে। একই সাথে এটি চুলের আর্দ্রতা বজায় রাখে, চুল পড়া রোধ করে এবং খুশকি প্রতিরোধে বিস্ময়কর ভাবে কাজ করে। আসুন তবে জেনে নেই কিভাবে অ্যালোভেরার ব্যবহারে আপনি ঘরে বসেই প্রায় বিনামুল্যে পেতে পারেন সুন্দর মোলায়েম চুল। আপনাকে শুধু ঘরের পেছনের কিংবা বারান্দার ফাঁকা জায়গায় ছোটো একটি অ্যালভেরার গাছের টব রাখতে হবে, আর অবসরে তার একটুখানি যত্ন নিতে হবে। বাকি রইল আপনার চুলের যত্ন, সেটা করবে অ্যালোভেরা নিজেই। কিভাবে? আসুন দেখে নেই চুল কন্ডিশনিঙের জন্য ঘরে বসেই অ্যালভেরা কন্ডিশনার তৈরির সঠিক নিয়মটি
  • .গাছ থেকে দুই বা তিনটি বড়, পুরু পাতা কেটে নিন আপনার চুল যত বেশি ঘন হবে তত বেশি পাতার দরকার হবে সাধারনত খুব মোটা চুলের জন্য তিনটি পাতাই যথেষ্ট
  • . একটি ধারালো ছুরি ব্যবহার করে প্রতিটি গাছের পাতা থেকে পুরু সবুজ চামড়া সরিয়ে পাতার ভেতরের পরিষ্কার জেলি যতটা সম্ভব বের করে নিন তাই উপরের আস্তরণটি কাটার সময় সতর্ক থাকুন যেন জেলি কাটা অংশের সাথে পরে না যায় একটি বাটিতে জেলি রাখুন
  • . ব্লেন্ডারে এই জেলি নিয়ে ভাল করে ব্লেন্ড করুন, পানি দেবার দরকার নেই বের করার আগে দেখুন যেন সবটুকু জেলি খুব ভাল ভাবে ব্লেন্ড হয়

  • .এবার এই মিশ্রণটি ভাল করে ছেঁকে নিনলক্ষ্য করুন জেলি ছেঁকে নেবার পর যেন তা এর মধ্যের সাদা অংশ থেকে আলাদা হয়ে আসে নইলে এই সাদা অংশটি চুলে আঠার মত লেগে যাবে ব্যস, তৈরি আপনার নিজের ঘরে তৈরি টাটকা অ্যালোভেরা কন্ডিশনার
  • .এবার চুলে ভাল ভাবে শ্যাম্পুর পরে চুলের আগা থেকে গোঁড়া পর্যন্ত এই জেলি ভাল করে ম্যাসাজ করে মেখে নিন চাইলে অন্য কোন কন্ডিশনারের সাথে একই সাথে মিশিয়েও এটি ব্যবহার করতে পারেন
  • .এবার চুলের ষ্টীম ক্যাপ টি পরে নিন, মিনিটের জন্য হেয়ার ড্রায়ার দিয়ে ষ্টীম নিন চাইলে হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহার না করলেও চলবে,অ্যালভেরা কন্ডিশনার চুলে তার যাদুর পরশ ছোঁয়াতে কিছুক্ষনের জন্য জন্য অপেক্ষা করুন
  • . এবার ভাল করে পানিতে চুল ধুয়ে ফেলুন আপনার নিয়মিত চুলের যত্নে এভাবেই ব্যবহার করুন ঘরে তৈরি অ্যালোভেরা কন্ডিশনার এই অ্যালোভেরা কন্ডিশনার ব্যবহারে সব চাইতে সুবিধাজনক দিকটি হলো এর সাথে আপনি পছন্দের অন্যান্য প্রসাধনীও সমান তালে ব্যবহার করতে পারবেন

- See more at: http://www.priyo.com/2013/08/18/27256.html#sthash.Dr6MpNN2.dpuf
 



No comments:

Post a Comment