
খেতে টক হোক বা মিষ্টি, কামরাঙ্গা ফলটির সবটুকুই উপকারী। বিশ্বজুড়ে কামরাঙ্গা স্টার ফ্রুট বা ক্যারামবোলা নামে পরিচিত। শ্রীলংকা, ভারত বা ইন্দোনেশিয়াতে এর উৎপত্তি।এই ফলে তৈরি করা যায় নানা রকম খাবার। এই যেমন-জেলি, জ্যাম, মোরব্বা, চাটনি ও আচার।চলুন আজ এর বিভিন্ন গুণের কথা জানা নেওয়া যাক।অনেকের ধারণা যে সব ফল কিনতে খরচ বেশি হয় এসব ফল পুষ্টি গুণেভরা। কিন্তু এমন অনেক ফল আছে যা খুব সস্তায় পাওয়া যায় অথচ সব ধরণের গুণের সংমিশ্রণে ঠাসা।এদের মধ্যে কামরাঙ্গা একটা।
কামরাঙ্গা
একটি চিরসবুজ ছোট মাঝারি আকৃতির গাছের টকমিষ্টি ফল। গাছ ১৫-২৫ ফুট লম্বা হয়। ঘন ডাল পালা আচ্ছাদিত, পাতা যৌগিক, ১-৩ ইঞ্চি লম্বা। বাকল মসৃন কালো রংএর। ফল ৩-৬ ইঞ্চি ব্যাসের এবং ভাজযুক্ত। ফল কাঁচা অবস্থায় সবুজ এবং পাকলে হলুদ। কামরাঙ্গা টক স্বাদযুক্ত বা টকমিষ্টি হতে পারে। কোন কোন গাছে একাধিকবার বা সারাবছরই ফল পাওয়া যায়। এটি ভিটামিন এ ও সি এর ভাল উৎস। সেপ্টেম্বর থেকে জানুয়ারিতে ফল পাওয়া যায়।
বৈজ্ঞানিক নাম: Averrhoa
carambola Linn. পরিবার: Oxalidacea ইংরেজি নাম: Chinese gooseberry,
Carambola
পুষ্টিগুণ:
কামরাঙ্গা ভিটামিন ‘সি’র একটি বড় উৎস। কামরাঙ্গাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে এন্টি-অক্সিডেন্ট ও পটাশিয়াম।
রুপচর্চায়:
দৃষ্টিনন্দন এ ফল ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতেও সহায়তা করে। পাশাপাশি এ ফল কাজ করে চুল, ত্বক, নখ ও দাঁতের নানা সমস্যা সমাধানে।এর রস চুলে মাখলে খুশকির সমস্যা থেকে সমাধান পাওয়া যায়।
ঔষধিগুণ:
*** কামরাঙ্গা পুড়িয়ে ভর্তা করে খেলে ঠাণ্ডাজনিত সমস্যা থেকে মুক্তি মেলে। দীর্ঘদিনের জমাট সর্দি বের করে দিয়ে কাশি উপশম করে। শুকনো কামরাঙ্গা জ্বরের জন্য খুব উপকারি।
*** কামরাঙ্গায় ঔষুধিগুণ রয়েছে প্রচুর। নিয়মিত কামরাঙা খেলে শরীরে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।কামরাঙ্গা রক্ত পরিশোধন করে। কামরাঙ্গার পাতা ও কচি ফলে আছে ট্যানিন, যা রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে।
*** ফল এবং পাতা গরম পানিতে সিদ্ধ করে পান করলে বমি বন্ধ হয়। পাতা ও ডগার গুঁড়া সেবনে জলবসন্ত ও বক্রকিৃমি নিরাময় হয়। কাশি ও অ্যাজমা নিরাময়ে পোড়াকামরাঙ্গা উপকারী
*** শুকনো কামরাঙ্গার গুঁড়া পানির সঙ্গে রোজ একবার করে খেলে অর্শ রোগে উপকার পাওয়া যায়। আর বাতের ব্যথায়ও কামরাঙ্গা বেশ উপকারি।
***কামরাঙ্গা রুচি ও হজমশক্তি বাড়ায়। পেটের ব্যথায় কামরাঙ্গা খুব উপকারি। কামরাঙ্গায় আছে এলজিক এসিড। এটি অন্ত্রের ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।
তবে যারা কিডনি জটিলতায় ভুগছেন তাদের কামরাঙ্গা থেকে সতর্ক থাকা উচিৎ। যেমন- কিডনিতে পাথর বা যারা কিডনি ডায়ালাইসিস চিকিৎসায় আছেন তাদের কামরাঙ্গা খাওয়ার ক্ষেত্রে সচেতন থাকা উচিত। কেননা কামরাঙ্গাতে রয়েছে অক্সালিক এসিড যা কিডনি জটিলতায় ভুক্তোভুগীদের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে।
(উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ ও ইন্টারনেট থেকে সংগৃহতি)